চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা
আকর্ষণ সমূহ
তথ্য
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামটি খুব পুরাতন নয় কারন ২০০১ সালের আগে এই জেলাটি নবাবগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। প্রাক ইংরেজ ও ইংরেজ শাসনামলে মুর্শিদাবাদের নবাবরা এখানে বিশেষ করে দাউদপুর মৌজায় ছুটি কাটাতে আসতেন। নবাবরা এখানে তাঁদের কাছের মানুষজনদের নিয়ে শিকার করতে আসতেন তাই জায়গাটির নাম হয় নবাবগঞ্জ। আবার এও বলা হয়ে থাকে যে, বাংলার (বাংলা-বিহার-উরিশ্যা) নবাব সরফরাজ খান (খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৩৯-৪০) এখানে একবার শিকার করতে এসে তাঁবু বানিয়েছিলেন তাই এই জায়গার নাম হয় নবাবগঞ্জ আবার বেশীরভাগ গবেষক মনে করেন আলিবর্দি খাঁর শাসনকালে (খ্রিষ্টপূর্ব ১৭৪০-৫৬) এই জায়গার নাম দেওয়া হয় নবাবগঞ্জ। ১৮শ শতকের শুরুতে এবং মধ্যবর্তী সময়ে ব্রিটিশ শাসকদের ভয়ে অনেক মানুষ কলকাতা থেকে এখানে আসতে থাকেন এবং এটি জনবহুল স্থানে পরিনত হয়। সেসময় এখানে “চাঁপাই” গ্রামে একটি ডাকঘর ছিল এবং এই গ্রামের নামের সূত্র ধরেই জায়গাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামে পরিচিতি লাভ করে। একসময় রাজশাহী জেলার একটি সাব ডিভিশন ছিল এই চাঁপাইনবাবগঞ্জ। বলা হয়ে থাকে মহানন্দা ও গঙ্গা নদীর মধ্যবর্তী হওয়ায় এই স্থানটির অনেক কৌশলগত ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব ছিল।
Where to stayচাঁপাইনবাবগঞ্জে থাকার জন্য শহরে অনেক হোটেল আছে। যেমনঃ ১। হোটেল রোজ আনোয়ার হোসেন আনু, স্টেশন রোড, (মহনন্দা বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন) ,লাখেরাজপাড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর। ফোনঃ ০১৭৬১৮৫৫৪৭১ ২। লাল বোডিং মো: সেনটু মিঞা, ঢাকা বাসস্ট্যান্ড, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোনঃ ০১৭১৮২৭৯৮৪১ ৩। হোটেল আল নাহিদ আলহাজ রফিকুল ইসলাম শান্তিমোড়, আরামবাগ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোনঃ ০১৭১৩৩৭৬৯০২ ৪। হোটেল স্বপ্নপুরী মো: বাবুল হাসনাত দুরুল, আরামবাগ মোড়, বিশ্ব রোড, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোনঃ ০১৭১১৪১৬০৪১ ৫। নবাবগঞ্জ বোডিং এ্যড: কাশেম মিঞা হাসপাতাল রোড, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোনঃ ০১৭১৫১৬৭৬৪৬ ৬। হোটেল রংধনু মোসারফ হোসেন লাখেরাজ পাড়া, মহনন্দা বাসষ্ট্যান্ড, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফোনঃ ০১৭১২৩৩৯৬৮৭
How to goঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দূরত্ব ৩১৯.৪ কিলোমিটার (ভায়া রাজশাহী)। আপনি সড়কপথ এবং রেলপথে সেখানে পৌছাতে পারেন।
ঢাকা থেকে বিভিন্ন বাস যেমনঃ হানিফ এন্টারপ্রাইজ, মডার্ন এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিভিন্ন জেলা ও শহরে বাস ছেড়ে যায়। মূলত এখান থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যই মূলত তিন ধরনের বাস ছেড়ে যায়, যেসব হলঃ গেইট লক, সরাসরি ও লোকাল সার্ভিস। এখান থেকে অন্যান্য রুটে চলাচলকারী বাস সার্ভিসগুলোর মধ্যে আছেঃ নবাবগঞ্জ-শিবগঞ্জ, নবাবগঞ্জ-নওগাঁ, নবাবগঞ্জ-নাচোল, নবাবগঞ্জ-রহানপুর। সোনা মসজিদ থেকে রাজশাহী প্রতিদিন সকাল ৭.১৫ মিনিট থেকে বিকাল ৫.১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা পর পর চলাচল করে। এছাড়া বিআরটিসি বাস নবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় চলাচল করে। এখানে দুইটি বাস টার্মিনালের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাস টার্মিনাল এবং অপরটি ঢাকা বাস টার্মিনাল।
অতীতে নদী পথই ছিল পরিবহনের প্রধান মধ্যম। এখান থেকে বিভিন্ন জেলায় পরিবহনের জন্য পদ্মা নদী, মহানন্দা নদী, পাগলা নদী, মরাগঙ্গা নদী ও কিছু বিল ব্যাবহার করা হত। ফারাক্কা বাঁধের কারনে পদ্মা নদীর পানি কমে যাওয়াতে নদীপথের জনপ্রিয়তা কমে যায়। তবে এখনও এই জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে নদী পথে মাল পরিবহন করা হয় যেমন এই জেলার পশ্চিম এবং পূর্ব অংশ থেকে নদী পথই মাল পরিবহনের একমাত্র ভরসা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রোহানপুর এবং রাজশাহীর সাথে রেল যোগাযোগ ব্যাবস্থা খুবই সীমিত। এই জেলার ভেতর দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক রেল লাইন ভারতের পশিমবঙ্গের মালদায় চলে গেছে। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্টেশন যেমনঃ নবাবগঞ্জ সদর, আমনুরা, নাচোল, নিজামপুর, রোহানপুর থেকে লোকাল ট্রেন রাজশাহী ও দেশের অন্যান্য অংশে যাতায়াত করে। তাছাড়া নবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী পর্যন্ত একটি শাটল সার্ভিস চলাচল করে। আপনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী পৌঁছে দেশের যেকোনো প্রান্তে আন্ত নগর ট্রেনে যাতায়াত করতে পারেন।