বাগেরহাটের বিখ্যাত ষাট গম্বুজ মসজিদের পশ্চিম দিকে বিবি বেগনীর মসজিদটি অবস্থিত। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর মসজিদটির ব্যাপক মেরামতের কাজ করলেও স্থানীয়দের দখল করা মসজিদের এলাকা উদ্ধার করতে পারেনি। তারপরও বিবি বেগনীর মসজিদ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি একগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। মসজিদের প্রকৃত ইতিহাস জানা না গেলেও স্থানীয়রা মনে করেন বিবি বেগনী ছিলেন খান জাহান আলীর একজন স্ত্রী আবার অনেকে মনে করেন তিনি ছিলেন খান জাহান আলীর একজন দাসী। এছাড়া এটি প্রকৃতপক্ষে একটি মসজিদ নাকি কবর এ ব্যাপারেও সন্দেহ রয়েছে। কোন কোন ইতিহাসবিদ এ জাতীয় স্থাপনাকে মাজার ভিত্তিক মসজিদ হিসেবে গণ্য করে থাকে।
একগম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের পশ্চিম দিক ব্যাতিত অন্য তিন দিকেই প্রবেশের ফটক রয়েছে। মসজিদের পূর্বদিকের তিনটি ফটকের মধ্যে মাঝেরটি বড়। এছাড়া এই মসজিদে উত্তর এবং দক্ষিন দিকের দেয়ালে একটি করে ফটক রয়েছে। তবে আজকাল শুধুমাত্র মসজিদের উত্তর দিকের ফটকটি মসজিদে প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। বিবি বেগনীর মসজিদের গম্বুজটির আকার সমসাময়িক (১৫শ শতকের) অন্যান্য মসজিদের গম্বুজের মতই। মসজিদের আশেপাশের বেশীরভাগ এলাকাই গ্রামবাসীরা দখল করে নিয়েছে আর এভাবে মসজিদের প্রাচীনতা ধরে রাখা কঠিন। সরকারের উচিত মসজিদের আশেপাশের জায়গা দখলমুক্ত করা যাতে করে পর্যটকরা মসজিদের আশেপাশে ঘুরে বেড়াতে পারে।
বাগেরহাট শহর থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে সহজেই বিবি বেগনীর মসজিদে আসতে পারবেন। এই মসজিদটির জিপিএস অবস্থান হল (২২°৪০’৩৫.১৮”উ, ৮৯°৪৪’৫.৮৪”পু).
ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে করে বাগেরহাটে পৌছাতে পারবেন। ঢাকা থেকে বাগেরহাটে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছঃ
১। মেঘনা পরিবহন
সায়েদাবাদ টার্মিনাল
যোগাযোগঃ ০১৭১৭১৭৩৮৮৫৫৩
ভাড়াঃ ৩৫০/-টাকা
২। শাকুরা পরিবহন
গাবতলি টার্মিনাল
যোগাযোগঃ ০১৭১১০১০৪৫০
ভাড়াঃ প্রায় ৫০০/-টাকা
৩। পর্যটক পরিবহন
সায়েদাবাদ টার্মিনাল
যোগাযোগঃ ০১৭১১১৩১০৭৮
ভাড়াঃ প্রায় ৩৫০/-টাকা
৪। সোহাগ পরিবহন
গাবতলি টার্মিনাল
যোগাযোগঃ ০১৭১৮৬৭৯৩০২
ভাড়াঃ ৩৮০/- টাকা
প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা মধ্যে তিনটি লঞ্চ এবং একটি স্টিমার ঢাকার সদরঘাট থেকে পিরোজপুরের হুলারহাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। হুলারহাটে পৌঁছে আপনাকে বাসে করে অথবা ভাড়া গাড়িতে করে সড়কপথে পিরোজপুর হয়ে বাগেরহাটে পৌছাতে হবে।
ঢাকার সদরঘাট থেকে পিরোজপুরের হুলারহাটের উদ্দেশ্যে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
• আল-খালাদি
• পার্বত
• ফারহানা
• টিপু
ছাড়ার সময়ঃ বিকাল ৫টা
পৌছানোর সময়ঃ সকাল ৯টা
ভাড়াঃ
রেগুলারঃ ১৮০/-টাকা
সিঙ্গেল কেবিনঃ ৫০০/-টাকা
ডবল কেবিনঃ ৮০০/-টাকা
বর্তমানে রাজধানী ঢাকার সাথে বাগেরহাটের আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। তবে, বাগেরহাটে একটি বিমানবন্দর নির্মাণাধীন রয়েছে। সুতরাং, অদুর ভবিষ্যতেই ঢাকা ও বাগেরহাটের মধ্যে আকাশপথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা যায়।
বাগেরহাটে থাকার জন্য খুব বেশি হোটেল নেই। তবে এখানে রেল রোডে অবস্থিত মমতাজ হোটেলে থাকতে পারেন। এই হোটেলটিতে সুযোগ সুবিধা কম থাকলেও সেবার মান মোটামোটি ভাল এবং খরচও একটু বেশি। এছাড়া এই হোটেলের আশেপাশে থাকার জন্য আরো কিছু হোটেল রয়েছে।
আপনার প্রশ্ন বা সমস্যার সহযোগিতা করায় আমরা সর্বদা তৎপর!