নাটোর রাজবাড়ি পাগলা রাজার প্রাসাদ বলেও বহুল পরিচিত যেটি রাজ জমিদার পরিবারের বাসস্থান হিসেবে ব্যাবহার করা হত। রানী ভবানী এখানে বাস করতেন এবং মৃত্যুর পর তাঁর স্বামী এখানকার চা বাগান ও প্রাসাদের উন্নয়ন করেন। সাতটি আলাদা প্রাসাদের পরিত্যাক্ত ধ্বংসাবশেষ ঘিরে থাকা পরিখাগুলোতে এখন দেখা যায় ট্যাংক, অর্কিড এবং ফুলের বাগান। এই প্রাসাদগুলোর মধ্যে মাত্র চারটি এখন টিকে আছে কিন্তু বাকিগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। রানীর মৃত্যুর পর তাঁর দত্তক পুত্র রামকৃষ্ণ এই এলাকা শাসন করেন। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর তাঁর দুই পুত্র শিবনাথ এবং বিশ্বনাথ নাটোর জমিদারবাড়ির যৌথ মালিক হন ১৭৭৮ সালে। পুরো জমিদার বাড়ি তাদের তাঁদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। এরপর রাজবাড়িতে বড় পুত্রের অংশকে বলা হত “বড় তরফ” এবং ছোট পুত্রের অংশকে বলা হত “ছোট তরফ”।
রানী ভবানীর বড় পুত্র বড় তরফ নামে এবং ছোট পুত্র ছোট তরফ নামে পরিচিত ছিলেন। রানীর মৃত্যুর পর তাঁর দুই পুত্রের মধ্যে জমিদারী ভাগ হয়ে যায়। এখানে অনেক স্মৃতি স্তম্ভ আছে।
বাংলার অন্যতম বৃহত্তম জমিদারী ছিল নাটোরের জমিদারী। এই জমিদারীর সূচনা করেছিলেন কামদেবের দুই পুত্র রামজীবন এবং রঘুনন্দন। রামজীবনের পুত্রবধু ছিলেন রানী ভবানী। ১৮শ শতকে বাংলার রাজনীতিতে রানী ভবানী ছিলেন এক কিংবদন্তি। তাঁর জনপ্রিয়তা ও উদারতার কারনে দেশের প্রতিটি ঘরে তিনি আকর্ষণীয় ব্যাক্তিত্তে পরিণত হয়েছিলেন। জমিদার হবার পর রামজীবন ৫০.৪২ একর জায়গার ওপর দুই স্তরের পরিখার মধ্যে এই রাজবাড়িটি নির্মাণ করেন।
রাজবাড়িটির চতুর্দিক পরিখার মাধ্যমে সুরক্ষিত ছিল। রাজবাড়িতে নয়টি ভবন ছিল যেমনঃ বড় তরফের প্রাসাদ, ছোট তরফের প্রাসাদ, বড় তরফের কাচারি ভবন ও প্রহরী কক্ষ, ছোট তরফের কাচারি ভবন, রানী ভবন, অতিথিশালা, মধু রানী ভবন ইত্যাদি। ছোট তরফের প্রাসাদটি ১৯৮৪ সালে নাটোরের জজ কোর্ট হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে। এখানে বেশ কিছু পুকুর আছে যার মধ্যে একটি ছিল ছোট তরফের এবং আরেকটি বড় তরফের।এখানে রানীমহল নামে একটি পরিত্যাক্ত প্রাসাদ আছে যেখানে রানী বাস করতেন।
বাস থেকে নাটোর সদরে নেমে আপনি রিক্সা বা অটো নিয়ে এই রাজবাড়ি ঘুরে আসতে পারেন। আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন
নাটোর জেলা সদরে রেল ও সড়ক যোগাযোগ আছে। দেশের সব অঞ্চলের সাথে নাটোর সদর উপজেলা আসা যায়। ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা বিভাগ থেকে আপনি রেল বা সড়ক যে কোন যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে এখানে আসতে পারবেন। ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে নাটোর সদরে আসার জন্য আপনি কমলাপুর বা ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে রংপুর গামী \\\”রংপুর এক্সপ্রেস\\\” অথবা দিনাজপুর গামী \\\”দ্রতযান\\\” অথবা লালমনিরহাট গামী \\\”লালমনি এক্সপ্রেস\\\” এর টিকিট কেটে ট্রেনে করে নাটোর রেল স্টেশনে নামতে পারেন। আর ঢাকা থেকে বাস যোগে নাটোর আসার জন্য আপনি কলাবাগান, কল্যাণপুর, শ্যামলী বা গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ অথবা নাটোর গামী হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল, শ্যামলী, দেশ ট্রাভেলস এর যে কোন বাসে চড়ে আসতে পারেন।
১। শ্যামলী পরিবহন
১২, দক্ষিণ কল্যানপুর, মিরপুর রোড, ঢাকা
ফোনঃ ০২-৯০০৩৩১, ০২-৮০৩৪২৭৫
২। হানিফ এন্টারপ্রাইজ
ঢাকা অফিসঃ পান্থপথ- ০১৭১৩৪০২৬৭০
আরামবাগ- ০১৭১৩৪০২৬৭১, সায়েদাবাদ- ০১৭১৩৪০২৬৭৩
৩। গ্রিন লাইন পরিবহন
কল্যানপুর ব্রাঞ্চঃ ৩/২, দক্ষিণ কল্যানপুর, ঢাকা
ফোনঃ ০১৭৩০০৬০০৮০
৪। মর্ডান এন্টারপ্রাইজ (এসি/নন-এসি)
প্রধান অফিসঃ লেক সার্কাস, পান্থপথ, কলাবাগান, ঢাকা
ফোনঃ ০২-৯১২৩৭৪৩
ব্রাঞ্চ অফিসঃ গাবতলি বুকিং অফিস, ইন্টারসিটি বাস টার্মিনাল (কাউন্টার নং ১৯),
মিরপুর, ঢাকা
পদ্মা এক্সপ্রেস (ট্রেন নং ৭৫৯), মঙ্গলবার বন্ধ,
ঢাকা থেকে রাজশাহী, সময়ঃ রাত ১১ঃ১০ থেকে ভোর ০৪ঃ৫০
নাটোরে থাকার জন্য নিম্নের হোটেলগুলোতে খোঁজ নিতে পারেনঃ
১। হোটেল ভিআইপি
বড় হরিশপুর, ফোনঃ ০৭৭-১৬৬০৯, +৮৮০১৭১৮৬৭৩৭৩৫
২।হোটেল মিল্লাত
মাদ্রাসা মোড়, নাটোর সদর
৩। হোটেল প্রিন্স
রেলওয়ে স্টেশন বাজার, ফোনঃ ০৭৭১-৬১৩৫৬, ০১৭৪৬০২৯৪২৯
৪। হোটেল রাজ
মাদ্রাসা মোড়,নাটোর সদর
ফোনঃ ০৭৭১-৬৬৬৬০, ০১৭২৭৩৭১৫০০
৫। হোটেল রুকসানা
ঠিকানাঃ কানাইখালী, পুরাতন বাস স্ট্যান্ড, নাটোর সদর
ফোনঃ ০৭৭১-৬২৪৩১, ০১৭৩৯৯৮৭০১৭
৬। নাটোর বোর্ডিং
ঠিকানাঃ নিচাবাজার, হাসপাতাল রোড, নাটোর সদর
ফোনঃ ০৭৭১-৬২০০১
৭। নাটোড় সুগার মিলস গেস্ট হাউস
ঠিকানাঃ নাটোর সুগার মিল এলাকা, নাটোর সদর
১। চারপাশে ঘুরে ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন।
২। ছবি তুলতে পারেন।
৩। রাজবাড়ির পুকুরগুলোতে নৌকা ভ্রমণ করতে পারেন।
এখানে খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকলেও আপনি রাজবাড়ি এলাকার মধ্যে “কফি হাউস” এ যেতে পারেন অথবা আশে পাশে রেস্টুরেন্ট এবং ফাস্ট ফুডের দোকানের খোঁজ করতে পারেন। এছাড়া আপনি সাথে করে খাবার নিয়েও যেতে পারেন।
আপনার প্রশ্ন বা সমস্যার সহযোগিতা করায় আমরা সর্বদা তৎপর!