আহসান মঞ্জিল

Type: যাদুঘর
Contributed By: Nayeem
Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Brief

আহসান মঞ্জিল প্রাসাদটি ছিল ঢাকার নবাব পরিবারের বাসস্থান এবং দরবার। নজরকাড়া এই ভবনটি ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে কুমারতলীতে অবস্থিত। ইন্দো-সারাসিনিক রিভাইভাল স্থাপত্য শৈলীতে এই প্রাসাদটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৮৫৯ সালে এবং সম্পন্ন হয় ১৮৭২ সালে। এই প্রাসাদটিকে জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

মুঘল আমলে এখানে জামালপুর পরগনার (জেলা) জমিদার শেখ এনায়েত উল্লাহর একটি বাগানবাড়ি ছিল। আকর্ষণীয় ব্যাক্তিত্বের অধিকারী শেখ এনায়েত উল্লাহ কুমোরতলীতে(কুমারতলী) বিশাল এলাকা অধিগ্রহন করে তাঁর বাগানবাড়িতে অন্তর্ভুক্ত করেন। এখানে তিনি ‘রঙমহল’ নামে একটি চমৎকার প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন। এই প্রাসাদে তিনি দেশ বিদেশ থেকে নিয়ে আসা সুন্দরী নারীদের দামী পোশাক ও ব্যয়বহুল গয়না পরিয়ে রাখতেন এবং উপভোগ করতেন। কথায় আছে যে, সেসময়কার ঢাকার ফৌজদার (মুঘল সম্রাটের প্রতিনিধি) রঙমহলের একজন নারীর প্রতি আকর্ষিত হয়েছিলেন এবং এই কারনে শেখ এনায়েত উল্লাহকে একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াত করার পর বাড়ি ফেরার সময় ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেন। পরবর্তীতে ক্ষোভে এবং দুঃখে সেই নারীও আত্মহত্যা করেন। রঙমহলের উত্তর-পূর্ব কোণে শেখ এনায়েত উল্লাহর কবর থাকেলও ১৯ শতকের শুরুতে কবরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।

সম্ভবত ১৭৪০ সালে নবাব আলিবর্দি খাঁর শাসনামলে শেখ এনায়েত উল্লাহর পুত্র শেখ মতিউল্লাহ ফরাসি বণিকদের কাছে পুরো সম্পত্তিটি বিক্রি করে দেন। এখানে শেখ এনায়েত উল্লাহর সম্পত্তির পাশেই ফরাসিদের একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল। সম্পত্তিটি কেনার পর বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে ওঠে। সেসময় মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের একটি ডিক্রি অনুযায়ী ফরাসিরা খাজনা না দিয়ে ব্যবসা করতে পারত।
সেসময় এখানে ইংরেজ এবং অন্যান্য ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করে ফরাসিরা ধনী হয়ে যায়। ফরাসিরা ক্রয় করা সম্পত্তিতে একটি বিশাল প্রাসাদ নির্মাণ করে এবং মিষ্টি পানির জন্য ‘লেস জাল্লা’ নামে একটি পুকুর খনন করে। আহসান মঞ্জিল চত্বরে এখনও পুকুরটি রয়েছে। ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে ফরাসিরা পরাজিত হলে ফরাসিদের সব সম্পত্তি ইংরেজরা অধিগ্রহন করে। ১৭৫৭ সালের ২২ শে জুন প্রায় ৩৫টি নৌকার বহর নিয়ে বুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে ফরাসিরা তাদের বাণিজ্য কেন্দ্রটি ত্যাগ করেন।

১৭৮৫ সালে ফরাসিরা তাদের সম্পত্তি জনাব চামপিগনি নামক একজন ফরাসি বণিকের কাছে হস্তান্তর করলেও ১৮০১ সালে পুনরায় এসব সম্পত্তি অধিগ্রহন করে। ১৮১৪ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ফরাসিরা ঢাকায় ফেলে রেখে আসা সব সম্পত্তি দাবি করে এবং ১৮২৭ সালে সেসব সম্পত্তি ফরাসিদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দিন দিনে ইংরেজদের ক্ষমতা বৃদ্ধির কারনে ফরাসিরা উপমহাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। সুতরাং, ফরাসিরা ঢাকায় তাদের সকল সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৩০ সালে কুমারতলীতে অবস্থিত ফরাসিদের বাণিজ্য কেন্দ্রটি ক্রয় করেন ঢাকার প্রতিষ্ঠিত জমিদার খাজা আলিমুল্লাহ।

ফরাসিদের বাণিজ্য কেন্দ্রটি কিছু মেরামত করে খাজা আলিমুল্লাহর বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং সেসময় এই স্থানে একটি পারিবারিক মসজিদ নির্মাণ করা হয়। খাজা আলিমুল্লাহর মৃত্যুর পর খাজা আলিমুল্লাহর পুত্র খাজা আব্দুল গনি এখানে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন এবং তাঁর পুত্র আহসান উল্লাহর নামে প্রাসাদের নাম রাখেন ‘আহসান মঞ্জিল’। পুরাতন ভবনের সংস্কার করার পাশাপাশি খাজা আব্দুল গনি পুরাতন ভবনের পূর্বদিকে আধুনিক নকশায় একটি নতুন ভবন নির্মাণ করেন। সেসময় থেকে পুরাটন ভবনটিকে বলা হয় ‘অন্দর মহল’ এবং নতুন ভবনটিকে বলা হয় ‘রঙমহল’।

১৮৮৮ সালের ৭ই এপ্রিল সন্ধ্যায় ঢাকায় একটি শক্তিশালী টর্নেডো আঘাত হানে এবং এর ফলে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। আহসান মঞ্জিলকে ক্ষতিসাধিত হওয়ার কারনে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। কলকাতা থেকে একজন ইংরেজ প্রকৌশলী এখানে এসে জায়গাটি দেখার পর জানান যে রঙমহল ছাড়া প্রাসাদের বাকি সকল অংশই নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। খাজা আব্দুল গনি এবং তাঁর পুত্র খাজা আহসানউল্লাহ প্রাসাদটি পুনর্নির্মাণে মনোনিবেশ করেন এবং দুটি ভবনই স্থানীয় প্রকৌশলী গোবিন্দ চন্দ্র রায়ের তত্ত্বাবধানে নতুন নকশায় নতুন করে নির্মাণ করা হয়।

রঙমহলের সাথে মিল রেখে পুরাতন ফরাসি ভবনটি একটি দোতলা ভবনে রুপান্তর করা হয়। কাঠের তৈরি একটি পথের মাধ্যমে দুটি ভবনের দ্বিতীয়তলাকে যুক্ত করা হয়। এ সময় নির্মাণ করা গম্বুজটি ছিল সবচেয়ে সুন্দর। গম্বুজটির কারনে প্রাসাদটির সৌন্দর্য বহুগুনে বেড়ে যায়।১৯০১ সালে খাজা আহসানউল্লাহর মৃত্যুর পর আহসান মঞ্জিলের গৌরবময় অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। তাঁর উত্তরসূরিরা পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারনে আহসান মঞ্জিলের গৌরবকে ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা প্রাসাদের বিভিন্ন অংশ ভাড়াটিয়াদের কাছে ভাড়া দেন এবং এর ফলে প্রাসাদটি বস্তিতে রুপান্তরিত হয়। ১৯৫২ সালে সরকার এই সম্পত্তিটি অধিগ্রহন করে এবং ঢাকা নবাব আদালতকে এটি দেখাশোনার দায়িত্ব প্রদান করে। ১৯৮৫ সালে ঢাকা জাতীয় জাদুঘর এই প্রাসাদটি অধিগ্রহন করে জাদুঘরে রুপান্তরিত করে।


How to go

How To Reach: পুরনো ঢাকা

You can reach Old Dhaka by taking local transport from any part of Dhaka city.

Where to Stay

Things to do

আহসান মঞ্জিলের আশেপাশে চমৎকার পরিবেশে ছবি তুলতে পারেন। আহসান মঞ্জিল ঘুরে দেখা ছাড়াও এখান থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে আপনি নৌকা ভ্রমনও করতে পারেন।

Eating Facilities

Map

More Stories

  • "Ahsan Manjil", also called The Pink Palace. It is situated at Old dhaka, just beside the bank of the river "Buri Ganga". The construction of the palace was begun in 1859 and completed in 1872.

From Other Web

  • Ahsan Manzil (Bengali: আহসান মঞ্জিল, Ahsan Monjil) was the official residential palace and seat of the Dhaka Nawab Family.[1] This magnificent building is situated at Kumartoli along the banks of the Buriganga River in Dhaka, Bangladesh.

  • From Tripadvisor.com

Talk to Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Questions, issues or concerns? I'd love to help you!

Click ENTER to chat