আংটি চোরার বিল পর্যটনের জন্য যতটা না গুরুত্ব বহন করে তার চেয়ে এই স্থানটিকে নিয়ে প্রচলিত লোকো কাহিনীর গুরুত্ব অনেক বেশি। এই অগভীর বিলটি প্রায় সারাবছরই পানিতে পরিপূর্ণ থাকে তবে বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে বিলটি প্রসারিত হয়ে যায়। তবে অন্যান্য মৌসুমে পানির পরিমান কমে যাওয়ায় স্থানীয়রা বিলের মধ্য দিয়ে যোগাযোগের জন্য রাস্থা নির্মাণ করে এতে করে বিলটি সংকুচিত হয়ে পড়ে।
এছাড়া, কৃষিকাজের জন্য স্থানীয়রা বিলটি ভরাট করে ফেলে বিভিন্ন শস্য চাষ করে থাকে। এ কারনেই আংটি চোরার বিলটি দুভাগে বিভক্ত। বেবুদ রাজার পুকুর দেখে ফেরার সময় আপনি এই বিলটি দেখতে পারবেন।
আংটি চোরার বিলকে নিয়ে প্রচলিত কল্পকাহিনি:
রাজা বেবুদ জাদুর আংটির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পেরে খুশি ছিলেন কারন এতে করে তার পুত্র যেমন জাদুর আংটির মাধ্যমে নিয়ে আসা তাঁর স্ত্রীর কাছে ভালভাবে খেতে পারবে অন্যদিকে তাঁরও সুযোগ রয়েছে স্ত্রীর সাথে প্রতিদিন মিলিত হওয়ার। একদিন রাজা তাঁর এক বন্ধুকে এই জাদুর সম্পর্কে জানান কিন্তু বন্ধুটি দুরভিসন্ধি করে রাজার কাছ থেকে একরাতে আংটি চুরি করে।
রাজা বেবুদ কোনভাবে এই চুরির ব্যাপারে জেনে যান এবং তাঁর প্রহরীদের নির্দেশ দেন আংটি চোরকে ধরার জন্য। প্রহরীরা চোরকে ধাওয়া করে এবং বেশিদুর পালাতে না পাড়ায় চোরকে ধরে ফেলে। এসময় আংটিটি চোরের হাত থেকে মাটিতে পড়ে আটকে যায় এবং এতে করে বিশাল একটি বিলের সৃষ্টি হয় যেটি বর্তমানে আংটি চোরার বিল নামে পরিচিত।
কল্পকাহিনীর অন্য বিবরণঃ একদিন বেবুদ রাজা এই বিলে নৌকা ভ্রমন করছিলেন। এসময় রাজা ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নেওয়ার সময় নৌকায় উপস্থিত রাজার একজন বন্ধু রাজার আঙ্গুল থেকে আংটি চুরির চেষ্টা করে। তবে খুলে নেওয়ার সময় আংটিটি পানিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে রাজা তাঁর প্রজাদের নির্দেশ দেন পানি থেকে আংটি খুঁজে আনতে। তবে আংটিটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই বিলটি আংটি চোরার বিল নামে পরিচিত হয়ে আসছে। উভয় কাহিনীতেই আংটি হারানোর পর বেবুদ রাজা তাঁর স্ত্রীকে জাদুর মাধ্যমে আর আনতে পারেননি।
ছবির জন্য ক্লিক করুন: http://www.panoramio.com/photo/91686014
http://www.panoramio.com/photo/91685995
গোয়ালঘাটের কাছে আংটি চোরার বিল অবস্থিত। নিম্নে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে আপনি এই বিলে পৌছাতে পারবেনঃ
১। প্রথমেই আপনাকে এগারোসিন্দুরে অবস্থিত গোয়ালঘাটে পৌছাতে হবে। গোয়ালঘাটের জিপিএস অবস্থান হল (২৪°১৫’৪৫.৬৪”উ, ৯০°৩৯’২৩.৮৫”পু)। ঢাকার মহাখালি থেকে আপনি এখানে বিভিন্ন বাসে করে আসতে পারেন যেমনঃ কিশোরগঞ্জের জলসিঁড়ি, অনন্যা এবং নান্দাইলের বন্যা পরিবহন। এসব বাসে ভাড়া পড়বে প্রায় ১৩০/- টাকা। তবে, বাসের হেলপারকে আগে থেকে জানিয়ে রাখতে হবে যে আপনি গোয়ালঘাটে নামতে চান।
২। গোয়ালঘাট থেকে অল্প হেঁটে আপনি এখানে আসতে পারবেন। দু ভাগে বিভক্ত আংটি চোরার বিলের গুগল মানচিত্রে অবস্থান হল (২৪°১৫’৫১.০৯”উ, ৯০°৩৯’৪২.৩৫”পু) এবং (২৪°১৫’৪৬.৩০”উ, ৯০°৩৯’৩৯.১১”পু)।
বিলের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি ছবি তুলতে পারেন।
কিশোরগঞ্জ শহরে খাওয়ার জন্য আপনি বেশকিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্ট পাবেন।এগুলো সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন
Questions, issues or concerns? I'd love to help you!