লালবাগ কেল্লা

Type: দূর্গ
Contributed By: Nayeem
Facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmail

Brief

রাজধানী ঢাকার দক্ষিনপশ্চিম অংশে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গর্বের সাথে দাড়িয়ে আছে ১৭শ শতকের অসমাপ্ত মুঘল দুর্গ লালবাগ কেল্লা (আওরঙ্গবাদ দুর্গ নামেও পরিচিত)। ১৬৭৮ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র মুঘল সুবেদার মুহাম্মদ আজমশাহ কেল্লাটির নির্মাণকাজ আরম্ভ করেন। তিনি বাংলায় ১৫ মাস অবস্থান করেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের ডাকে বাংলা ত্যাগ করার সময় কেল্লার নির্মাণ সমাপ্ত হয়নি।

পরবর্তীতে আজমশাহর উত্তরসূরি শায়েস্তা খান ঢাকার নতুন সুবেদার নিযুক্ত হন। তবে তিনিও কেল্লাটির নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেননি। ১৬৮৪ সালে শায়েস্তা খানের কন্যা ইরান দুখত পরীবিবি এখানেই মৃত্যুবরণ করেন। কন্যার মৃত্যুর পর শায়েস্তা খান কেল্লাটিকে অশুভ মনে করে এটির নির্মাণ অসমাপ্ত রাখেন। লালাবাগ কেল্লার তিনটি প্রধান স্থাপনার মধ্যে পরীবিবির মাজার অন্যতম।

শায়েস্তা খান ঢাকা ত্যাগের পর কেল্লাটির জনপ্রিয়তা কমে যায় কারন এসময় ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে রাজধানী স্থানান্তর করা হয়। মুঘলদের রাজত্ব শেষ হলে কেল্লাটিকে পরিত্ত্যাক্ত করা হয়। ১৮৪৪ সালে আওরঙ্গবাদের বদলে এলাকাটির নামকরন করা হয় লালবাগ এবং সেই সাথে কেল্লাটির নামও হয়ে যায় লালবাগ কেল্লা।

দুটি ফটক এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা দেয়ালের অংশসহ দীর্ঘদিন ধরে মনে করা হত যে কেল্লাটিতে তিনটি ভবন (মসজিদ, পরীবিবির মাজার এবং দিওয়ান-ই-আম) রয়েছে। তবে বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদফতর সাম্প্রতিক সময়ে কেল্লায় খননকাজ করলে আরও নতুন স্থাপনার অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়।

কেল্লার দক্ষিনদিকের প্রতিরক্ষা দেয়ালের দক্ষিণপশ্চিম কোনায় একটি বিশাল বুরুজ রয়েছে। দক্ষিনদিকের প্রতিরক্ষা দেয়ালের উত্তরে কিছু ভবন ছিল এবং পশ্চিম অংশে ঝর্ণাসহ একটি চমৎকার বাগান ছিল। কেল্লার বাসিন্দাদের থাকার ব্যবস্থা ছিল পশ্চিমের প্রতিরক্ষা দেয়ালের পূর্বদিকে অর্থাৎ মসজিদের দক্ষিন-পশ্চিমে।

কেল্লার দক্ষিনের প্রতিরক্ষা দেয়ালে সমান দূরত্বে দোতলা উচ্চতার সমান পাঁচটি বুরুজ রয়েছে এবং পশ্চিমের প্রতিরক্ষা দেয়ালে দুটি বুরুজ রয়েছে। দক্ষিনদিকের মূল ফটকের কাছে সবচেয়ে বড় বুরুজটি অবস্থিত। প্রতিটি বুরুজের সাথে মাটির নীচে অবস্থিত সুরঙ্গের যোগাযোগ রয়েছে।
কেল্লার মাঝখানে অবস্থিত তিনটি ভবন হলঃ পূর্বে দিওয়ান-ই-আম এবং হাম্মাম, পশ্চিমে মসজিদ ও পরীবিবির মাজার। ঝর্ণাসমৃদ্ধ একটি পানির চ্যানেলের মাধ্যমে এই তিনটি ভবনকে পূর্ব থেকে পশ্চিমে এবং উত্তর থেকে দক্ষিনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

দিওয়ান-ই-আমঃ দোতলা এই ভবনের নীচতলায় একটি হাম্মাম রয়েছে। হাম্মামের সাথে মাটির নীচে পানি গরম করার ব্যবস্থা রয়েছে। হাম্মামের পশ্চিমদিক একটি দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।

পানির ট্যাংকঃ দিওান-ই-আমের পূর্বদিকে একটি বর্গক্ষেত্রাকার পানির ট্যাংক রয়েছে (যেটির প্রতিটি দিক ৭১.৬৩ মিটার দীর্ঘ। ট্যাংকের অভ্যন্তরে নামার জন্য এটির চারকোণায় চারটি সিঁড়ি রয়েছে।

পরীবিবির মাজারঃ শায়েস্তা খানের কন্যা পরীবিবির মাজারটি কেল্লার মধ্যবর্তী স্থানে একটি চারকোণা কক্ষে অবস্থিত। এই মাজারটি একটি অষ্টভুজ গম্বুজ এবং পিতলের আবরনে আবৃত করা আছে। মাজারের ভিতর দিকের দেয়াল সাদা মার্বেলে মোড়ানো। এই কক্ষটিকে ঘিরে আরও আটটি কক্ষ রয়েছে যেগুলোর মধ্যে দক্ষিন পূর্ব কোনায় অবস্থিত কক্ষটিতে একটি ছোট কবর রয়েছে।

লালবাগ কেল্লা মসজিদ: তিনগম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি একটি পানির ট্যাংকসহ পূর্বদিকে অবস্থিত।

এই কেল্লার সাথে একদিকে যেমন জড়িয়ে আছে মুঘল যুবরাজ মোহাম্মদ আজমের স্বপ্ন যেটি শেষ পর্যন্ত আর পুরন হয়নি অপরদিকে এই কেল্লার প্রতিটি ইটের সাথে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস এবং রহস্য। সুতরাং নির্দ্বিধায় বলা চলে, লালবাগ কেল্লা (আওরঙ্গবাদ কেল্লা) না দেখলে ঢাকায় আপনার আসা সার্থক হবে না।


How to go

How To Reach: পুরনো ঢাকা

You can reach Old Dhaka by taking local transport from any part of Dhaka city.

Where to Stay

Things to do

দক্ষিন ফটকে টাওয়ারসহ এই কেল্লাটিতে রয়েছে তিনটি স্তর। লালবাগ কেল্লায় রয়েছে বেশকিছু গুপ্তপথ এবং একটি বিশাল মসজিদ। চারপাশে প্রতিরক্ষা দেয়াল দিয়ে সুরক্ষিত কেল্লাটির অভ্যন্তরে বেশকিছু চমৎকার স্থাপনা রয়েছে। এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছেঃ পরীবিবির মাজার, দর্শক হল, নবাব শায়েস্তা খানের গোসলখানা যেটি বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Eating Facilities

ঢাকা শহরে কোথায় খাবেন, সে পেইজটি দেখুন। দেখতে ক্লিক করুন

Travel Tips

বন্ধের দিনঃ রবিবার এবং সরকারি ছুটির দিন

খোলা থাকার সময়সূচীঃ সোমবার- দপুর ১.৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৫ টা;

মঙ্গলবার থেকে শনিবার, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা (অক্টোবর থেকে মার্চ);

সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর)
শুক্রবার নামাজের জন্য দুপুর ১২.৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে;
প্রবেশ মূল্যঃ ১০/- টাকা (বাংলাদেশীদের জন্য), ৫০/- টাকা (বিদেশীদের জন্য)
ফোনঃ ৮৮-০২-৯৬৭৩০১৮

Map

More Stories

From Other Web

Talk to Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Questions, issues or concerns? I'd love to help you!

Click ENTER to chat